ক্রিকেটের ইতিহাসে বাংলাদেশের ওয়ানডে পারফরম্যান্সের মধ্যে কিছু ম্যাচ এমন রয়েছে যেখানে দলের সংগ্রহ ছিল অত্যন্ত কম। এসব ম্যাচ বাংলাদেশের ক্রিকেটের শুরুর দিকের চ্যালেঞ্জগুলো এবং প্রতিপক্ষের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের প্রমাণ। চলুন বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা যাক বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বনিম্ন ম্যাচ সংগ্রহের রেকর্ড।
Read More:- বাংলাদেশের টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলির সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ
ওয়ানডেতে সর্বনিম্ন সংগ্রহ: একটি তালিকা
নিচের টেবিলে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে কম ম্যাচ সংগ্রহের পাঁচটি রেকর্ড দেখানো হলো:
প্রতিদ্বন্দ্বী দল | বাংলাদেশের রান | উইকেট হারানো | ওভার খেলা | রান রেট | মাঠ | তারিখ |
---|---|---|---|---|---|---|
জিম্বাবুয়ে | ৯৩ | ১৪ | ৩৬.৪ | ২.৫৩ | চট্টগ্রাম | ৩ নভেম্বর ২০০৯ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১১৭ | ১১ | ৩১.১ | ৩.৭৫ | মিরপুর | ৪ মার্চ ২০১১ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ১২৩ | ১২ | ৪২.০ | ২.৯২ | চট্টগ্রাম | ১৮ অক্টোবর ২০১১ |
শ্রীলঙ্কা | ১৫৩ | ১২ | ৪৫.৫ | ৩.৩৩ | কলম্বো (SSC) | ৫ আগস্ট ২০০২ |
ভারত | ১৬৩ | ২০ | ৪৩.১ | ৩.৭৭ | মিরপুর | ১৭ জুন ২০১৪ |
চট্টগ্রাম, ২০০৯: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে লড়াই
২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। মাত্র ৯৩ রানেই থামে তাদের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের বোলাররা তাদের দারুণ সঠিক লাইন ও লেন্থ দিয়ে চাপে রেখেছিলেন।
এই ম্যাচে দলের রান রেট ছিল মাত্র ২.৫৩। এমন নাজুক পারফরম্যান্স দলের জন্য ছিল একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ(BPL) 2025 live score
মিরপুর, ২০১১: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হতাশা
২০১১ সালের ৪ মার্চ ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার ভেঙে পড়ে মাত্র ৩১.১ ওভারে। দল করে ১১৭ রান, যেখানে রান রেট ছিল ৩.৭৫।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা দারুণ পারফরম্যান্স করেন, বিশেষ করে স্পিনাররা। এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য একটি কঠিন শিক্ষা ছিল কিভাবে চাপ সামলাতে হয়।
চট্টগ্রাম, ২০১১: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পুনরায় সংগ্রাম
মাত্র কয়েক মাস পর, ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর, চট্টগ্রামে আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। তবে সেই ম্যাচেও ব্যাটিং ব্যর্থতা চোখে পড়ে। পুরো দল ১২৩ রানেই গুটিয়ে যায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলারদের গতিময় আক্রমণ সামলাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়াম লিগ (BPL) 2025 পয়েন্ট টেবিল
কলম্বো, ২০০২: শ্রীলঙ্কার বোলিং আক্রমণে ভেঙে পড়া
২০০২ সালের ৫ আগস্ট, শ্রীলঙ্কার কলম্বো (SSC) মাঠে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ১৫৩ রানে অলআউট হয়। দলের রান রেট ছিল মাত্র ৩.৩৩।
এই ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য কঠিন ছিল কারণ শ্রীলঙ্কার সেই সময়ের অভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিল তারা।
মিরপুর, ২০১৪: ভারতের বিপক্ষে সর্বনিম্ন সংগ্রহ
২০১৪ সালের ১৭ জুন, ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। পুরো ইনিংসে তারা ২০ উইকেট হারিয়ে করে মাত্র ১৬৩ রান।
এই ম্যাচটি ভারতীয় বোলারদের দক্ষতার পরিচায়ক এবং একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের স্থিতিশীলতার অভাবের চিত্র।
আজকের বিপিএল ম্যাচের ভবিষ্যদ্বাণী, প্রতিকূলতা, লাইভ স্কোর
উপসংহার
উপরের রেকর্ডগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের ক্রিকেটে কঠিন সময়গুলো প্রায়ই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণের কারণে এসেছে। তবে এই ম্যাচগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েই বাংলাদেশ দল ধীরে ধীরে উন্নতি করেছে।
আজকের দিনে, বাংলাদেশ একটি শক্তিশালী ক্রিকেট দল হিসেবে গড়ে উঠেছে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা আশা করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এই ধরনের হতাশাজনক পারফরম্যান্স পেছনে ফেলে আরও ভালো ফলাফল করবে।
Read More:- বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন ম্যাচ অ্যাগ্রেগেটস: পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ
প্রশ্নোত্তর
চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ কত ছিল এবং কবে এই ম্যাচটি হয়েছিল?
চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ছিল ৯৩ রান। এই ম্যাচটি হয়েছিল ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে বাংলাদেশের রান রেট কত ছিল ২০১১ সালের ম্যাচে?
২০১১ সালের মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের রান রেট ছিল ৩.৭৫।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে বাংলাদেশের সংগ্রহ কত ছিল এবং রান রেট কত ছিল?
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কলম্বোতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১৫৩ রান এবং রান রেট ছিল ৩.৩৩।